Posts
পথের দাবী গল্পের সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর
1. "জগদীশবাবু ইতিমধ্যেই তাদের টিনের তোরঙ্গ, ছোটো বাক্স, পুঁটুলি তুলিয়া তদারক শুরু করে দিয়েছেন।" তাহাদের বলতে কাদের কথা বলা হয়েছে।
তাদের জিনিসপত্র তদারকের কারণ কী?
উত্তর: তেলের খনির মিস্ত্রি: কথাশিল্পী শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের পথের দাবি উপন্যাসের আলোচ্য অংশে তাদের বলতে জন ছয়েক বাঙালির কথা বলা হয়েছে। এরা সবাই উত্তর ব্রহ্মে বর্মা অয়েল কোম্পানির তেলের খনির কারখানায় মিস্ত্রির কাজ করছিল। কিন্তু সেখানকার জল হাওয়া সহ্য না হওয়ায় সেখানে না থেকে চাকরির উদ্দেশ্যে রেঙ্গুনে চলে এসেছিল।
তদারকের কারণ: এই বাঙালি শ্রমিকদের জিনিসপত্র খানা তল্লাসি করার কারণ ছিল, পুলিশের কাছে খবর ছিল যে বাঙালি রাজ বিদ্রোহী সব্যসাচী মল্লিক বর্মা এসেছেন। সেই সন্দেহ থেকে পুলিশের এই অভিমান।
2. গিরীশ মহাপাত্রের চেহারার বর্ণনা দাও।
উত্তর
: চেহারার বর্ণনা: শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের পথের দাবি উপন্যাসের প্রধান চরিত্র সব্যসাচী মল্লিক ছদ্মবেশে বর্মায় আসেন। সেখানে পুলিশ তাকে সন্দেহজনক। হিসাবে আটক করলেও তার পোশাক ও চেহারা দেখে চিনতে না পেরে ছেড়ে দেয়। গায়ের রং ফর্সা রোদে পুড়ে তামাটে হয়ে গেছে। বয়স ৩০-৩২, কিন্তু অত্যন্ত রোগা চেহারা। সর্বক্ষণ কাশতে থাকে, কাশির পরিশ্রমে হাঁপাতে থাকে। দেহের মধ্যে কেবল চোখে পড়ে উজ্জ্বল ও গভীর দুটি চোখ।
3. "বাবুটির স্বাস্থ্য গেছে কিন্তু শখ যোলো আনাই বজায় আছে।"-বাবুটির শখ কেমন?
উত্তর
: বাবুটির শখ: এখানে শখ বলতে গিরীশ মহাপাত্রের অদ্ভুত ও বাহারি পোশাক পরিচ্ছদের কথা বলা হয়েছে। তার স্বাস্থ্য রুগ্ন ও ভগ্ন হলেও পোশাকে তার কোনো ছাপ ছিল না। জাপানি সিল্কের রামধনু রঙের পাঞ্জাবি। বুক পকেটে বাঘ আঁকা রুমাল। পরনে বিলাতি মিলের কালো মখমল পাড়ের সূক্ষ্ম শাড়ি। পায়ে সবুজ রঙের ফুল মোজা-হাঁটুর ওপরে লাল ফিতে দিয়ে বাঁধা আর সেই সাথে বার্নিশ করা পাম্প-শু ও হরিণের শিঙের হাতল দেওয়া বেতের ছড়ি। জাহাজের ধকলে সমস্ত পোশাক নোঙরা হয়ে গেছে। তার অদ্ভুত পোশাক বৈচিত্র্য থানার সবাইকে অবাক করেছিল।
4. "কীরূপ সদাশয় ব্যক্তি ইনি"-সদাশয় ব্যক্তি কাকে কেন বলা হয়েছে?
উত্তর: সদাশয় ব্যক্তি বলার কারণ গিরিশ মহাপাত্রের জিনিসপত্র যখন তদারকি হচ্ছিল তখন তার পকেট থেকে একটি গাঁজার কলিকা বের হয়। যখন তাকে জিজ্ঞাসা করা হয় তখন সে জানায় সে নিজে গাঁজা খায় না। গাঁজার কলিকাটি রাস্তায় কুড়িয়ে পেয়েছে এবং তারপর সেটিকে নিজের কাছে রেখে দিয়েছে যদি কখনো কারও কাজে লাগে তখন সে তাকে সেটি দিয়ে দেবে। তার এই অদ্ভুত পরোপকারী ইচ্ছার জন্য নিমাইবাবু তাঁকে সদাশয় ব্যক্তি বলেন।
5. অপূর্বর ঘরে চুরি হওয়ার ঘটনাটি বর্ণনা কর।
উত্তর: চুরি হওয়ার ঘটনা: অপূর্ব সে সময়ে ঘরে ছিল না। সেই সময়ে তার ঘরে চুরি হয়েছিল। টাকাকড়ি কিছুই বাঁচানো যায়নি। কিন্তু এক খ্রিস্টান মেয়ের জন্য টাকাকড়ি ছাড়া যে সমস্ত জিনিস ছিল সেইসব বাঁচানো গিয়েছিল। মেয়েটি না থাকলে সমস্ত কিছু চুরি হয়ে যেত। সেই মেয়েটি নিজে চোর তাড়িয়ে নিজের হাতে ছড়ানো জিনিস গুছিয়ে দেয়। এবং কী কী জিনিস চুরি হয়েছে। আর কী কী আছে তার একটা ফর্দ তৈরি করে দেয়।
6. 'বুনো হাঁস ধরা এদের কাজ'-এ কথা কে বলেছিলেন? এ কথা বলার কারণ কী?
উত্তর
: বক্তা: শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের পথের দাবি নামাঙ্কিত রচনায় বুনো হাঁসের কথা বলেছিল রামদাস।
উক্তির কারণ: কথা প্রসঙ্গে অপূর্ব জানিয়েছিল গিরীশ মহাপাত্রকে হাতে পেয়েও সামান্যতম বুদ্ধিমত্তার পরিচয় না থাকায়, তাকে ছেড়ে দেয়। এই পুলিশ কাজকর্ম সম্পর্কে এতটাই অমনোযোগী যে অপূর্বর চুরি হওয়া কোনো জিনিসের কূল কিনারা করতে পারেনি। সেই কথা পুলিশ শুনে রামদাস রীতিমতো কৌতুকের সাথে আলোচ্য এই উক্তি করেছিল।