Please wait 0 seconds...
Step 3: last step
Click here
for going to destination
Congrats! Link is Generated

সহায়ক গ্রন্থ - কোনি

1. বারুণী কী? বারুণির দিনে গঙ্গার ঘাটে কোন দৃশ্য দেখা গিয়েছিল?
অথবা. "আজ বারুণী গঙ্গায় আজ কাঁচা আমের ছড়াছড়ি।"-বারুণী কি? গঙ্গায় কাঁচা আমের ছড়াছড়ি কেন? বারুণীর গঙ্গা তীরের বর্ণনা দাও।
উত্তর: বারুণী বাংলা কথা সাহিত্যের অন্যতম জনপ্রিয় লেখক মতি নন্দীর কোনি উপন্যাসের প্রথম পরিচ্ছেদ থেকে আলোচ্য অংশটি নেওয়া হয়েছে। বারুণী হল শতভিষা নক্ষত্রযুক্ত কৃষ্ণা চতুর্দশী তিথিতে পুণ্য স্নান দ্বারা পালনীর পর্ব বিশেষ। বর্তমানে এটি লৌকিক উৎসবের মর্যাদা পেয়েছে।
কাঁচা আমের ছড়াছড়ির কারণ: বারুণী উপলক্ষ্যে পুণ্য সঞ্চয়ের আশায় অনেকে গঙ্গা স্নান করতে আসে। গঙ্গা স্নানের সময় মানুষজন গঙ্গার ঘাটে আম দিয়ে স্নান করার ফলে সেখানে কাঁচা আমের ছড়াছড়ি হয়।
গঙ্গা তীরের বর্ণনা: বারুণী তিথিতে জল থেকে আম তুলে বাজারে কম দামে বিক্রির লোভে ছোটো ছোটো দলে ছেলেমেয়েরা ঘাটে ভিড় করে আছে। ছেলের দল কেউ গঙ্গার জলে দাঁড়িয়ে, কেউ বা জলে ভেসে রয়েছে একটু দূরে। একটা আম জলে পড়লেই তাদের মধ্যে হুড়োহুড়ি, কাড়াকাড়ি পড়ে যায়। আম পেলে পকেটে ঢুকিয়ে রাখে আর পকেট ভরে এলে ঘাটের কোথাও রেখে আসে। পুণ্য সঞ্চয়কারী মানুষরা স্নান করে। কাদা মেখে ঘাটে উঠে এসে কেউ কেউ যায় ঘাটের মাথায় বসে থাকা বামুনদের দিকে। যারা পয়সা নিয়ে জামাকাপড় রাখে। গায়ে মাখার জন্য নারকেল তেল বা সরষের তেল নেয়। কপালে আঁকে চন্দনের ফোঁটা কেউ কেউ আবার পথের ভিখারিদের উপেক্ষা করে চলে যায়। কেউ আবার করে না। পথের দু'ধারে নানান জিনিসের দোকান বসে। কেউ কেউ আবার বাজার থেকে ওল বা থোর বা কমলালেবু কিনে আনে। রোদে তেতে ওঠা রাস্তায় তাড়াতাড়ি পা চালিয়ে বিরক্তির মেজাজে বাড়ি ফিরতে থাকে।

2. বিষ্টুচরণ ধরের পরিচয় দাও। তার খাদ্যাভ্যাসের বিবরণ দাও।
উত্তর: বিষ্টচরণ ধর: কোনি উপন্যাসে মতি নন্দী দেখিয়েছেন বিভিন্ন চরিত্রের অনন্য সমাবেশ। সেইরকমই একটি চরিত্র বিষ্ট ধর। সে পাড়ার একজন বেশ গণ্যমান্য ব্যক্তি। বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে তিনি সভাপতির পদ অলঙ্কৃত করেন। আসন্ন নির্বাচনে তাঁর ভোটে দাঁড়ানোর ইচ্ছা রয়েছে। পাড়াতে তিনি বেষ্টাদা নামে পরিচিত। অত্যন্ত বনেদি বংশের সন্তান বিষ্টুচরণ। আই.এ. পাশ। তাঁর সাতটি বাড়ি রয়েছে, বড়ো বাজারে ঝাড়ন মশলার কারবার রয়েছে। বছর ৪০ বয়সে তাঁর দেহের আয়তন সাড়ে তিন মন। তাঁর একটি অস্টিন গাড়ি আছে। যেটাতে করে তিনি যাতায়াত করেন। বিষ্টুচরণের শখ হল মালিশ ওয়ালাকে দিয়ে মালিশ করানো। তাই গঙ্গার ঘাটে বিষ্টুচরণ যায় মালিশ করাতে।
খাদ্যাভ্যাসের বিবরণ: বিষ্টুচরণের ওজন তিন মন হওয়াতে তিনি খাওয়ার লোভে সংবরণ করেছেন এবং ডায়েটিং শুরু করেছেন। আগে তার জলখাবারে ২০টি লুচি লাগত, সেই সঙ্গে ৫০০ গ্রাম ক্ষীর খেতেন। কিন্তু এখন ৩০০ গ্রাম ক্ষীর এবং জলখাবারে ১৫টা লুচি খান। দুপুরে ভাত খান আড়াইশো গ্রাম চালের। আর গরম ভাতের সাথে চার চামচ ঘি, বিকেলে দু'গ্লাস মিছরির শরবত আর চারটি কড়াপাকের সন্দেশ খাওয়ার অভ্যাস রয়েছে। রাত্রে বিষ্টুচরণ খান ১২টি রুটি। যদিও তিনি মাছ, মাংস গ্রহণ করেন না। কারণ তাঁর বাড়িতে রাধাগোবিন্দের নিত্য পূজা হয়। খাবার দাবারের লোভ তাঁর একেবারেই নেই।

3. "চার লক্ষ টাকা খরচ করেও আপনি নিজের শরীরটাকে চাকর বানাতে পারবেন না"-কে কাকে উদ্দেশ্য করে উক্তিটি করেছেন বক্তা কেন এরূপ মন্তব্যটি করেছেন?
অথবা, আপনার মন হুকুম করতে জানে না তাই শরীর পারল না প্রসঙ্গ উল্লেখ করে তাৎপর্য লেখো।
উত্তর: বক্তা-শ্রোতা মতি নন্দী রচিত কোনি উপন্যাসে ক্ষিতীশ সিংহ বিষ্টচরণ ধরকে উদ্দেশ্য করে উক্ত উক্তিটি করেছেন।
তাৎপর্য: ক্ষিতীশ সিংহের সঙ্গে গঙ্গার ঘাটে সাক্ষাৎ হয় তিন মন ওজনের দেহের মালিক বিষ্টচরণ ধরের। তার বিপুল দেহ ও মালিশের বিচিত্র ভঙ্গি দেখে ক্ষিতীশবাবু তাকে তার জীবনের আসন্ন বিপদ সম্পর্কে সচেতন করে দেন। তিনি বলেন ওজনটা বিপজ্জনক, হার্টের ক্ষতি হতে পারে। বিষ্টু ধর একথা শুনে ভয় পেয়ে নিজের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে আতঙ্কিত হয়ে পড়লে ক্ষিতীশ সিংহ তাকে বলেন, তিনি অনেক বড়োলোক, কিন্তু ৪ লক্ষ টাকা খরচ করেও নিজের শরীরটাকে নিজের অনুগত দাসে পরিণত করতে পারবে না। কারণ ভালো ভালো খাবার খেয়ে শুধুমাত্র শরীরের আয়তন বেড়েছে কিন্তু মনের বল একটুও বাড়েনি।
ক্ষিতীশ তার ডান কনুই শরীরের সঙ্গে লাগিয়ে পিস্তল ধরার ভঙ্গিতে হাতটা সামনে বাড়িয়ে বিষ্ট ধরকে তা নামাতে বলেন। বিষ্ট ধর কয়েক বার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। তখন ক্ষিতীশবাবু তাকে বলেন, জোরে বলতে শুধু গায়ের জোর বোঝায় না। মনের জোরে সব হয়। আর এই মনের জোর আসে প্রচণ্ড ইচ্ছাশক্তি থেকে। শরীর যতটা পারে, তার থেকে বেশি যদি শরীরকে দিয়ে করানো যায় তবে ইচ্ছার জোর বাড়তে থাকবে। বিষ্ট ধর যেহেতু শরীরকে দিয়ে হুকুম মানাতে ব্যর্থ তাই তিনি রোগা শরীরে ক্ষিতীশের হাত নামাতে ব্যর্থ হন।

4. 'চার বছরের মধ্যেই প্রজাপতি ডানা মেলে দিয়েছে।' প্রজাপতি কী? প্রজাপতির পূর্ব ও বর্তমান অবস্থার পরিচয় দাও। অথবা, ক্ষিতীশবাবুর দোকানের বর্ণনা দাও।
উত্তর:প্রজাপতি: বাংলা কথা সাহিত্যের অন্যতম জনপ্রিয় লেখক মতি নন্দীর কোনি উপন্যাস থেকে আলোচ্য অংশটি নেওয়া হয়েছে। প্রজাপতি হল ক্ষিতীশ সিংহের একটি কাপড়ের টেলারিং এর দোকান।
প্রজাপতির পূর্ব অবস্থা প্রজাপতির পূর্বের নাম ছিল সিনহা টেলারিং আগে ক্ষিতীশ সিংহের আমলে প্রজাপতি ঠিকমতো ডানা মেলতে পারেনি। অর্থাৎ দোকান থেকে লাভ হত না। বরং সবসময় লোকসান হত। পূর্বে দুটি দর্জিতে জামা প্যান্ট তৈরি করত আর দেয়াল আলমারিতে ছিল কিছু সিন্থেটিক কাপড়। ক্ষিতীশবাবু ঘণ্টা দুয়েকও সময় দিতে পারতেন না দোকানে। ফলে দেখা গেল আলমারির কাপড় অর্ধেকের বেশি অদৃশ্য হয়েছে। দোকানের ভাড়া বাকি পড়েছে চার মাস। আর দোকানে লাভের বদলে লোকসান শুরু হয়েছে। প্রজাপতির অবস্থার পরিবর্তন এইরকম অবস্থার দোকানের দায়িত্ব হাতে নিলেন লীলাবতী। টেলারিং-এর ডিপ্লোমাধারী দুই মহিলাকে নিয়ে নিজের গহনা বন্ধক দিয়ে ঢেলে দোকান সাজান লীলাবতী। নতুন নাম দেন প্রজাপতি। পুরুষদের পোশাক তৈরি বন্ধ করে দিয়ে শুধুমাত্র মেয়েদের ও বাচ্চাদের পোশাক তৈরি শুরু করেন। কোনো পুরুষ কর্মচারী নেই। চার বছরের মধ্যে দোকান লাভের মুখ দেখেছেন। লীলাবতী অর্ধেকের বেশি গহনা ছাড়িয়ে এনেছেন। আগে তিনদিনের মধ্যে জিনিস তৈরি করে দেওয়া হত। এখন দশ দিনের আগে দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। দোকানের জায়গা কম বলে হাতিবাগানে নতুন ঘর দেখেছেন লীলাবতী দেবী।

5. আমার বিরুদ্ধে চার্জগুলো স্পষ্ট করে চিঠিতে বলা নেই, বক্তা কে? তার বিরুদ্ধে কী অভিযোগ উঠেছিল।
উত্তর: বক্তা: মতি নন্দী কোনি উপন্যাসে আলোচ্য অংশের বক্তা হলেন ক্ষিতীশ সিংহ। ক্ষিতীশের বিরুদ্ধে অভিযোগ হরিচরণবাবুরা সমবেতভাবে জানিয়েছিলেন জুপিটারের সদস্যরা কেউ ক্ষিতীশ সিংহকে চায় না। কারণ, তারা ক্ষিতীশ সিংহের ব্যবহারে অত্যন্ত বিরক্ত হয়েছিলেন। তার বিরুদ্ধে মূল অভিযোগ ছিল ছেলেমেয়েদের মন মেজাজ বোঝার ক্ষমতা তার নেই।
সদস্যরা মূলত যে অভিযোগগুলি এনেছিল তা হল-
(1) জুনিয়ার ছেলেদের সামনেই শ্যামলকে তার টাইম আর আমেরিকার ১২ বছরের মেয়েদের টাইমের তুলনা করে অপমান করেছেন।
(ii) রেকর্ডধারী গোবিন্দকে বলেছে কান ধরে জুপিটার থেকে বের করে দেবে।
(iii) সুহাস শরীর অসুস্থ থাকার কারণে ১০ দিন আসতে পারেনি। তার বাড়িতে গিয়ে ক্ষিতীশ সুহাসেরা বাবাকে যা তা কথা বলেছে।
(iv) অমিয়া আর বেলা জুপিটার ছেড়ে অ্যাপোলোয় গিয়েছে শুধু তার জন্য। ওদের চুল কাটতে নির্দেশ দিয়েছিল। এমনকি পুরুষদের মতো ওদের বারবেল নিয়ে এক্সারসাইজ করার জন্য ঝগড়া করত।
এই অভিযোগগুলি এনে ক্ষিতীশ সিংহকে চিহ্ন ট্রেনার থেকে বরখাস্ত করা হয়েছিল।

6. "ওরা জুপিটারের শত্রু, কতকগুলো স্বার্থপর লোভী, মূর্খ আমায় দল পাকিয়ে জড়িয়েছে বলে, শত্রুর ঘরে গিয়ে উঠব"-ওরা বলতে কারা, প্রসঙ্গ উল্লেখ করে উক্তিটির তাৎপর্য বিশ্লেষণ কর।
উত্তর: ওরা বাংলা কথাসাহিত্যের জনপ্রিয় লেখক মতি নন্দীর কোনি উপন্যাস থেকে আলোচ্য অংশটি নেওয়া হয়েছে। ওরা বলতে অ্যাপোলোকে বোঝানো হয়েছে।
প্রসঙ্গ: আলোচ্য অংশটির বস্তা হলেন ক্ষিতীশ সিংহ। দীর্ঘদিন ধরে জুপিটারের সঙ্গে তার সম্পর্ক ছিল তাই তার পক্ষে অন্য কোথাও যাওয়া অসম্ভব ছিল, তাই এমন মন্তব্য।
তাৎপর্য: ক্ষিতীশবাবু সর্বক্ষণের সঙ্গী ভেলো। তিনি যখন শুনেছিলেন ক্ষিতীশকে জুপিটার থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে তখন কষ্ট পেয়েছেন। তিনি অনুরোধ করেছিলেন ক্ষিতীশবাবু যেন সমস্ত অভিমান ত্যাগ করে অ্যাপোলোতে যোগ দেন। ক্ষিতীশবাবু অবশ্য তা চায়নি কারণ তার সঙ্গে জুপিটারের সম্পর্ক-তা ছিন্ন করা সম্ভব নয়। লেখক জানিয়েছেন জুপিটারের সঙ্গে তার নাড়ীর সম্পর্ক। যদিও সাঁতারু তৈরি করা ক্ষীতিশবাবুর জীবনের একমাত্র লক্ষ্য। সুতরাং, লেখক জানান লক্ষ্য পূরণ করতে হলে নাড়ীর বন্ধন ছিন্ন করতে হবে। ক্ষীতিশবাবুর এই বক্তব্যের মধ্য দিয়ে প্রমাণিত হয়-
(i) ক্ষিতীশ মানুষ হিসেবে অনেকখানি উদার ও মহৎ।
(ii) সে সুযোগ সন্ধানী নয়।
(iii) তার মধ্যে একজন ট্রেনারের সমস্ত গুণ রয়েছে।

7. কোনি উপন্যাসে কোনি চরিত্রের পরিচয় দাও।
উত্তর: ভূমিকা: বাংলা কথা সাহিত্যের অন্যতম জনপ্রিয় লেখক মতি নন্দীর কোনি নামাঙ্কিত কিশোর উপন্যাসের প্রধান চরিত্র কোনি। এই চরিত্রের বিশ্লেষণ করলে কতকগুলি বৈশিষ্ট্য পাওয়া যায়।
(i) কঠোর জীবনসংগ্রাম: কোনি অর্থাৎ কনকচাঁপা পাল অতি দারিদ্র্য পীড়িত সংসারের মেয়ে। চেহারা ছেলেদের মতো, মেয়ে মদ্দানি। কোনো কিছুতেই সে ভয় পেয়ে পিছিয়ে যায় না। সে অবিরাম ২০ ঘণ্টার ভ্রমণ প্রতিযোগিতা হোক বা সাঁতরে আমের অধিকার রক্ষায় হোক বা নামজাদা সাঁতারুদের সঙ্গে সাঁতার প্রতিযোগিতায় হোক, সবেতেই সে এগিয়ে থাকে।
(ii) পরিবারের প্রতি দায়বদ্ধতা দাদার মৃত্যুর পর পরিবারের খাবারের জোগানের জন্য যখন সে প্রজাপতিতে কাজ করে তখন দেখা যায় ট্রেনিং-এর পর শত কষ্ট হলেও ছুটে যায় প্রজাপতিতে। পরিবারের প্রতি মমত্ববোধ আছে বলে ক্ষিতীশ তার জন্য যে পুষ্টিকর সুষম খাদ্যের বরাদ্দ করেছিল, সেই বাবদ পাওয়া টাকা সে বাড়ি নিয়ে যেতে চায়। যাতে তা দিয়ে পরিবারের প্রত্যেকের খাবারের চালটুকু সে কিনতে পারে।
(iii) প্রখর আত্মসম্মান বোধ কোনির আত্মসম্মান বোধ প্রখর। চিড়িয়াখানায় বেড়াতে গিয়ে বড়ো স্কুলের দিদিমণির কাছে জল চেয়ে না পেলে সে প্রতিহিংসায় জ্বলে ওঠে। সেই জল যখন ইস্কুলের ছাত্রী হিয়া মিত্র দিতে আসে, তখন সে প্রবল আঘাতে ফিরিয়ে দেয়।
(iv) কঠোর পরিশ্রমী কোনির সৎ সাহস, কঠোর পরিশ্রম, নিষ্ঠা, জমে থাকা দুঃখ অভিমান শেষ পর্যন্ত তার গলায় জয়মাল্য পরিয়ে দিয়েছে।
(v) মূল্যায়ন: কোনি উপন্যাসে কোনি প্রধান চরিত্র। সৎ পথে যে সাফল্য আসবে তা কোনি জীবন দিয়ে প্রমাণ করে। মতি নন্দীর কোনি কিশোর উপন্যাসের অন্যতম শ্রেষ্ঠ চরিত্র।

৪. 'হঠাৎ কোনির দুচোখে জলে ভরে এল'-কোনির দুচোখে জলে ভরে ওঠার কারণ কী, এরপর কী ঘটেছিল?
উত্তর: দুচোখ জলে ভরে ওঠার কারণ মতি নন্দীর কোনি উপন্যাস থেকে আলোচ্য অংশটি নেওয়া হয়েছে। রবীন্দ্র সরোবরে অনুষ্ঠিত এক মাইল সাঁতার প্রতিযোগিতায় যে ২৫ জন প্রতিযোগী অংশগ্রহণ করেছিল তার মধ্যে একদিকে যেমন ছিল বালিগঞ্জের হিয়া মিত্র, অন্যদিকে তেমনই ছিল শ্যামপুকুর বস্তির কোনি। সাধারণ সাঁতারু কোনি নিজেকে উজাড় করেও টেকনিক জানা হিয়া মিত্রের সঙ্গে পেরে ওঠেনি। কিন্তু দাদা কমলকে কথা দিয়েছিল মেয়েদের মধ্যে প্রথম হবে। সেই জন্য দাদা ধার করে ১২ টাকা দিয়ে কোনিকে সাঁতারের পোশাক কিনে দিয়েছিল। কোনি নিজের এই পরাজয় ও দাদাকে দেওয়া কথা না রাখতে পারার বেদনা মেনে নিতে পারেনি সেই সময় ক্ষিতীশের কণ্ঠস্বর ও সাঁতার শেখানোর প্রস্তাব তাকে দুর্বল করে দিয়েছিল। সেই মুহূর্তে দুঃখ অভিমানে কোনির চোখে জল দেখা দিয়েছিল।
পরবর্তী ঘটনা: এরপর যে ঘটনা ঘটেছিল, তা কোনির জীবনের সব থেকে দিশা পরিবর্তনকারী ঘটনা। সাধাসিদে পরিবারের কোনি খুব ভালো সাঁতার জানলেও সে কোনোদিন কোনো প্রশিক্ষকের কাছে সাঁতার শেখার কথা ভাবেনি। সম্ভবত সাঁতার প্রশিক্ষণ বিষয়ে তেমন কিছু জানাও তার ছিল না। কিন্তু তার জীবনের এই পর্বে ক্ষিতীশের মতো একজন প্রশিক্ষককে পেয়ে সে ধীরে ধীরে সাফল্যের শীর্ষে পৌঁছায়।

9. 'এরা তো জুপিটারের শত্রু, আমি কী নেমোকহারাম হলাম'
অথবা, 'বুকের মধ্যে প্রচণ্ড একটা মোচড় অনুভব করল'-আলোচ্য উক্তি অনুসারে বক্তার মানসিকতার পরিচয় দাও।
উত্তর: বস্তার মানসিকতা বাংলা কথাসাহিত্যের অন্যতম জনপ্রিয় লেখক মতি নন্দীর কোনি উপন্যাস থেকে আলোচ্য অংশটি নেওয়া হয়েছে।
ক্ষিতীশ সিংহ সুদীর্ঘ ৩৫ বছর জুপিটারের চিফ ট্রেনার ছিলেন। কিন্তু হরিচরণের চিফ্ ট্রেনার হওয়ায় ইচ্ছায় ক্ষিতীশবাবুকে বিভিন্ন অজুহাতে অভিযুক্ত করে জুপিটার থেকে বের করে দেওয়া হয়। এরকম অবস্থায় ক্ষিতীশবাবুর চোখে পড়ে কোনি নামক একটি দরিদ্র মেয়েকে। কোনিকে একজন চ্যাম্পিয়ন সাঁতারু তৈরি করতে চায় ক্ষিতীশ। সেই জন্য ক্ষিতীশবাবু কোনিকে নিয়ে জুপিটারে এলে প্রথমে আশ্বস্ত করা হলেও শেষ পর্যন্ত জায়গা নেই বলে কোনিকে সদস্যপদ দেওয়া হল না।
তখন একজন প্রকৃত শিক্ষক সত্ত্বা ক্ষিতীশবাবু কোনির সাঁতার অনুশীলনের জন্য এসে দাঁড়ায় জুপিটারের প্রতিপক্ষ অ্যাপোলোর গেটে। অ্যাপোলোর গেটে এসে ক্ষিতীশবাবুর নতুন করে জ্ঞানচক্ষুর জাগরণ ঘটল। একদিকে জুপিটার অন্যদিকে তার আদর্শ। শেষ পর্যন্ত শুধুমাত্র কোনিকে সাঁতার শেখানোর জন্য অ্যাপোলোতে যোগ দেয়। তিনি এই শর্তে অ্যাপোলোতে আসেন। কোনি হবেন অ্যাপোলোর কিন্তু ক্ষিতীশবাবু চিরকাল থাকবেন জুপিটারের।

10. 'আমার ভবিষ্যত'-কে, কার কোন প্রশ্নের উত্তরে কথা বলেছিলেন, তাকে কেন নিজের ভবিষ্যৎ বলেছিলেন?
উত্তর: বাংলা সাহিত্যের অন্যতম জনপ্রিয় লেখক মতি নন্দী রচিত কোনি উপন্যাসে ক্ষিতীশবাবু কোনিকে দেখিয়ে বিষ্টুচরণ ধরকে বলেছিলেন।
ক্ষিতীশের ভবিষ্যৎ বক্তা ক্ষিতীশবাবু যে বক্তব্যটি এখানে প্রকাশ করেছেন। তা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ সুদীর্ঘ ৩৫ বছর ধরে ক্ষিতীশবাবু সাঁতারু তৈরির কারিগর। কিন্তু হরিচরণের প্রশিক্ষক হওয়ার ইচ্ছায় মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে ক্ষিতীশবাবুকে জুপিটার থেকে ছাড়িয়ে দেয়। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল প্রশিক্ষক হওয়ার যোগ্যতা নেই ক্ষিতীশবাবুর। ভাগ্যের পরিহাসে এই সময় ক্ষিতীশবাবুর চোখে আসে কোনি। তাকে বেঙ্গল চ্যাম্পিয়ন করার মাধ্যমে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করতে চান ক্ষিতীশবাবু। তাই ক্ষিতীশবাবু কোনিকে চিহ্নিত করে বলেছেন। 'আমার ভবিষ্যৎ'। বস্তুত ক্ষিতীশ কোনিকে তৈরি করেছিলেন এমনভাবে কোনির জয়ের অর্থ ক্ষিতীশবাবুর জয়। অপ্রত্যাশিতভাবে ক্ষিতীশবাবুকে জুপিটারের কর্তারা বের করে দিলে দিশাহারা ক্ষিতীশবাবু কোনিকে নিয়ে স্বপ্ন দেখেছিলেন। আলোচ্য উক্তিটি সেই স্বপ্নপূরণের আকাঙ্খা থেকে উচ্চারিত।

11. "কমলের স্বর অদ্ভুত করুণ একটা আবেদনের মতো শোনাল"-কমল কে? তার স্বর করুণ কেন?
উত্তর: কমল বাংলা কথাসাহিত্যের অন্যতম জনপ্রিয় লেখক মতি নন্দী রচিত কোনি উপন্যাস থেকে আলোচ্য অংশটি গৃহীত হয়েছে। দারিদ্র্য পীড়িত কোনিদের সুবিশাল সংসারে বড়ো ছেলে কোনির বড়দা কমল। যার নিজের স্বপ্ন ছিল সাঁতারু হওয়ার, অ্যাপোলোতে সাঁতার কাটত। কিন্তু বাবার মৃত্যুর পর তার কঠোর বাস্তব উপস্থিত হয়, সব স্বপ্ন ভেঙে চুরমার হয়ে যায়।
কমলের করুণ স্বর: ছোটো বোন কোনির খেলাধুলার প্রতি প্রবল আগ্রহ দেখে ক্ষিতীশ কোনির দায়িত্ব নেয়। দায়িত্ব নেওয়ার পর আবার নতুন করে কোনির মধ্য দিয়ে স্বপ্ন পূরণের আশা জাগে কমলের। কিন্তু আবার বিধি বাম। শরীর অসুস্থ হওয়াতে, কমল কাজ করতে পারে না। তাই সংসারে খাবার জোগানের জন্য কোনিকে সুতোর কারখানায় ৬০ টাকা বেতনে কাজে লাগানোর কথা ভাবতে হয়। তাই অসুস্থ কমলের সাথে ক্ষিতীশ দেখা করতে এলে, স্বপ্ন আর বাস্তবের টানাপোড়েন কমলের স্বর করুণ আর্তনাদের মতো শোনায়।

إرسال تعليق

Oops!
It seems there is something wrong with your internet connection. Please connect to the internet and start browsing again.
AdBlock Detected!
We have detected that you are using adblocking plugin in your browser.
The revenue we earn by the advertisements is used to manage this website, we request you to whitelist our website in your adblocking plugin.
Site is Blocked
Sorry! This site is not available in your country.