Posts

সিন্ধু তীরে কবিতা রচনাধর্মী প্রশ্ন উত্তর

1. সিন্ধুতীরে কবিতায় দিব্যস্থানটির পরিচয় দাও? উত্তর: ভূমিকা: সৈয়দ আলাওলের পদ্মাবতী কবিতায় সমুদ্রকন্যা পদ্মা যেখানে থাকতেন সেই স্থানটি ছিল দিব্যস্থান। অনুপম বর্ণনায় সেই স্থানের পরিচয় দিয়েছেন কবি সৈয়দ আলাওল। দিব্যস্থানের পরিচয় পদ্মাবতী কাব্যে সৈয়দ আলাওল সিন্ধু তীরের বর্ণনায় ঐশ্বর্য বিলাসময় বাংলাদেশের দৃশ্যকে তুলে ধরেছেন, পদ্মা সমুদ্রকন্যা অনুসারে সিন্ধু তীরে কবিতায় অচৈতন্য পদ্মাবতীর পড়ে থাকা অবস্থায় সেই স্থানটির অপরূপ বর্ণনা দিয়েছে। অতি মনোহর দেশ, সেখানে দুঃখ, কষ্ট কিছু নেই সর্বদা সত্য ধর্ম বিরাজমান। আহত এবং সঙ্গাহীন পদ্মাবতীকে যে স্থান থেকে সমুদ্রকন্যা পদ্মা উদ্ধার করে সেই স্থানে সমুদ্র মধ্যবর্তী অঞ্চলে এক দিব্য ক্রান্তি, সুন্দর প্রাসাদের অবস্থান এবং এক পার্বত্য প্রদেশের কোলে সুন্দর উদ্যানের অবস্থিতি লক্ষ্য করা যায়- উপরে পর্বত এক ফল ফুলে অচিরেক তার পাশে রচিল উদ্যান। এই স্থানটিকে দিব্যস্থান রূপে কবি অঙ্কন করেছেন। কারণ উদ্যানটি নানা ফল, ফুল, বৃক্ষ ও লতাগুল্মে পরিপূর্ণ। এছাড়া সেই উদ্যানে সুগন্ধি মনোহর ফুল এবং সুলক্ষণ যুক্ত বৃক্ষ রয়েছে এবং বাগানের পাশে স্বর্ণখচিত এক সুন্দর প্রাসাদ রয়েছে। যেখানে সমুদ্রকন্যা সর্বদা অবস্থান করে। কবির কল্পনায় এটি দিব্যপুরী। মূল্যায়ন: মধ্যযুগের কবি সৈয়দ আলাওল অপূর্ব বর্ণনায় এই বাগানের এবং প্রাসাদের পরিচয় দিয়েছেন যা কল্পনার অতীত। তাই কবির ভাষায় মনোহর রূপ ধারণ করেছে। 2. সমুদ্র তীরে কবিতায় পদ্মার চরিত্রটি আলোচনা করো। উত্তর: ভূমিকা: সিন্ধু তীরে কাব্যাংশে সমুদ্রকন্যা পদ্মার চরিত্রটি পাঠকের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। কবির বর্ণনায় পদ্মার নানান গুণ দেখতে পাওয়া যায়। পদ্মা চরিত্রের পরিচয় সমুদ্রের মাঝে এক দিব্যপুরী। যে দিব্যপুরীটি স্বর্গীয় বৈশিষ্ট্য উজ্জ্বল। সেখানেই বাস করেন সমুদ্ররাজের কন্যা পদ্মা। একদিন ভোরবেলায় সখীসহ উদ্যানে পরিভ্রমণ করতে এসে তিনি সমুদ্রতীরে একট ভেলা দেখে অবাক হন। এই ভেলায় ছিলেন শৃঙ্খল রাজকন্যা পদ্মাবতী এবং তার চার সখী। এরা সকলেই অচৈতন্য অবস্থায় ছিলেন। এই দৃশ্য থেকে পদ্মা বিচলিত হয়ে ওঠেন। তারপর সখীদের নির্দশ দেন তাদের উদ্যানের মধ্যে নিয়ে আসতে। শুভমর্মী পদ্মা অপরিচিত এই নারীদের বিপদাপন্য অবস্থা দেখে কষ্ট পান এবং খুব তাড়াতাড়ি তাদের সেবাযত্নের ব্যবস্থা করেন। এখানে পদ্মার যেনসিক্ত ও দরদি হৃদয়ের পরিচয়টি বড়ো হয়ে উঠেছে। রাজকন্যা হলেও পদ্মার মনে কোনো অহংকার নেই। অসহায়কে সেবা করাই তার ধর্ম। অপরিচিত হলেও পদ্মাবতী ও তার সখীদের যেভাবে তিনি জ্ঞান ফিরিয়ে এনেছেন তাতে তার চরিত্রের মহৎ দিক ধরা পড়েছে। এমন মহানুভব মানব চরিত্র মধ্যযুগের বাংলা সাহিত্যে বিরল। মূল্যায়ন: প্রকৃতপক্ষে সমুদ্র কন্যার জন্য জীবন ফিরে পেয়েছে পদ্মাবতী ও তার চার সখী। তাই সমুদ্রসুতাপদ্মা মানবীক গুণে পরিপূর্ণ এক অসামান্য নারী, একথা আমরা বলতেই পারি।

Post a Comment