অভিষেক কবিতার ব্যাখ্যাধর্মী বা সংক্ষিপ্ত উত্তর ধর্মী প্রশ্ন
1. "জিজ্ঞাসিল মহাবাহু বিস্ময় মানিয়া"-মহাবাহু কে. কার কাছে তিনি কী জিজ্ঞাসা করেছিলেন?
উত্তর: মহাবাহু মেঘনাদবধ কাব্যের প্রথম স্বর্গ অভিষেক নামাঙ্কিত কাব্যাংশে মহাবাহু হলেন মেঘনাদ অর্থাৎ ইন্দ্রজিৎ মহাবাহুর জিজ্ঞাসা: ছদ্মবেশধারী লক্ষ্মীর কাছে ইন্দ্রজিৎ লঙ্কার কুশল সংবাদ জিজ্ঞাসা করেছিলেন। প্রমোদ উদ্যানে হঠাৎ জননী স্থানীয়া ধাত্রীর আগমন অপ্রত্যাশিত। তাই ইন্দ্রজিৎ তার কাছে লঙ্কার সংবাদ জানতে চান। ইন্দ্রজিৎকে ছদ্মবেশধারী দেবী জানান বীরবাহু নিহত হয়েছেন ও রাবণ যুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এই দুটি সংবাদ শুনে মহাবিস্ময়ে ইন্দ্রজিৎ প্রশ্ন করেন-কে হত্যা করল বীরবাহুকে? কারণ তিনি নিজেই রামচন্দ্রসহ সংহার করেছেন।
2. "ত্যজ কিঙ্করির আজি" বক্তা কে? তার মনে এমন প্রশ্ন জেগে ওঠার কারণ কী?
উত্তর
: বক্তা: মাইকেল মধুসূদন দত্তের অভিষেক কবিতায় ইন্দ্রজিতের পত্নী প্রমিলার মনে এই প্রশ্ন জেগেছে।
প্রশ্ন জাগার কারণ: ইন্দ্রজিৎ ধাত্রীর ছদ্মবেশধারী দেবীর কাছে স্বর্ণলঙ্কার দুর্দিনের খবর পান। এই সংবাদ শুনে তিনি স্বর্ণলঙ্কার উদ্দেশ্যে রওনা দেওয়ার জন্য প্রস্তুত হন। এমন সময় পত্নী প্রমিলা তার রাস্তা রোধ করে দাঁড়াল। প্রমিলা নিজের স্বামীর কাছে জানতে চান, তাকে কী কারণে ত্যাগ করা হচ্ছে। আসলে স্বামী বিরহে বিরহ কাতর পত্নীর অন্তরের রূপটি এই উক্তির মাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে।
3. "হৈমবতী সুত যথা নাশিতে তারকে মহাসুর" কোন প্রযত্নে এই উক্তি, এই উক্তির কারণ কী?
উত্তর: প্রসঙ্গ: মাইকেল মধুসূদন দত্ত রচিত অভিষেক কবিতায় ইন্দ্রজিৎ যুদ্ধে যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিয়েছিলেন। যুদ্ধ যাত্রার প্রস্তুতি প্রসঙ্গে আলোচ্য উক্তিটি কবি করেছেন।
উত্তির কারণ: কার্তিক কর্তৃক তারকাসুর নিধনের পৌরাণিক কাহিনিকে কবি স্মরণ করেছেন। হৈমবতী সূত বলতে দেব সেনাপতি কার্তিকের কথা বলা হয়েছে। দেবতাদের বিপদ থেকে রক্ষা করার জন্য কার্তিক যেমন যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়েছিলেন এবং তারকাসুরকে নিধন করেছিলেন, ঠিক সেইভাবেই যুদ্ধ যাত্রার প্রস্তুতি
নিয়েছিলেন ইন্দ্রজিৎ।
4. "কে কবে শুনেছে পুত্র ভাসে শিলা জলে"। এমন উপমা দেওয়ার কারণ লেখো।
উত্তর: উপমার কারণ অভিষেক কবিতার রাক্ষসরাজ রাবণ এমন উপমা প্রয়োগ করেছেন। রামচন্দ্রের পুনরায় বেঁচে ওঠা সম্পর্কে সন্দিহান হয়ে এমন প্রশ্ন করেছেন। রাবণ পুত্র ইন্দ্রজিৎ রামচন্দ্রকে দুবার যুদ্ধে পরাজিত করেছেন। দুটি ক্ষেত্রেই রামচন্দ্রের মৃত্যু নিশ্চিত ছিল। কিন্তু বাস্তবে বিপরীত ঘটনা ঘটে। রামচন্দ্র দুবারই পুনঃজীবন লাভ করে। রাবণ নিজের জীবন অভিজ্ঞতা থেকে জানাচ্ছেন। শিলা বা পাথরের যেমন জলে ভাসা কঠিন, তেমনই কোনো মানুষ মরে গিয়ে তার বাঁচা কঠিন। আসলে রাম মায়াবী মানব। তাই এটা সম্ভবপর হয়েছে। এমনটাই মনে করে ইন্দ্রজিৎ।
. "নিকুম্ভিলা যজ্ঞ সাঙ্গ কর" নিকুম্ভিলা যজ্ঞ কেন করা হত?
5 উত্তর: নিকুম্ভিলা যজ্ঞ করার কারণ: নিকুন্তিলা লঙ্কার কুলদেবী। রাবণের বিশ্বাস ইন্দ্রজিৎ আরাধ্য অগ্নিদেবতার পূজা সঠিকভাবে সুসম্পন্ন করলে তার সিদ্ধিলাভ নিশ্চিত। রামচন্দ্রকে পরাজিত করবার ক্ষমতা অর্জন করতে পারবেন। স্বর্ণলঙ্কার দেবী নিকুন্তিলা অতিশয় গুপ্ত জায়গায় থাকেন। এখানে ইন্দ্রজিৎ যুদ্ধ যাত্রার পূর্বে পূজা অর্চনার মাধ্যমে কুলদেবীকে তুষ্ট করতে আসেন।