আফ্রিকা কবিতার সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর



1. 'ছিনিয়ে নিয়ে গেল তোমাকে আফ্রিকা।' আফ্রিকাকে কীভাবে ছিনিয়ে নিয়ে যাওয়া হল তা লেখ।

উত্তর: আফ্রিকার জন্ম ইতিহাস আফ্রিকা নামাঙ্কিত কবিতায় কবি রবীন্দ্রনাথ জানিয়েছেন স্রষ্টা নিজের প্রতি অসন্তোষে নতুন সৃষ্টিকে বিধ্বস্ত করেছিল। তার সেই অধৈর্যের দিনে রুদ্র সমুদ্রের বাহু আদিম ধরিত্রী মাতার বুক থেকে আফ্রিকাকে ছিনিয়ে নিয়ে গিয়েছিল। বিশ্ব মানচিত্র আফ্রিকা হল এক স্বতন্ত্র ভূখণ্ড।

2. 'কৃপন আলোর অন্তঃপুরে'- কবিতা অনুসারে বক্তব্যটি লেখ।

উত্তর: বক্তব্য: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত আফ্রিকা কবিতায় আফ্রিকার ভৌগোলিক, রাজনৈতিক সম্পর্কে মরমি বিশ্লেষণ রয়েছে। বনস্পতির নিবিড় আলিঙ্গনে, অরণ্যের দুর্ভেদ্য আলো ছায়ায় আবৃত থাকে আফ্রিকা। নিরক্ষীয় জলবায়ুর অন্তর্গত হওয়ার জন্য বৃহৎ পাতা বিশিষ্ট গাছের সৃষ্টি হয় এখানে। অসংখ্য বৃক্ষ ঘন সন্নিবিষ্ট হওয়ায় অতি সামান্য আলোটুকু প্রবেশের অধিকার পায় না। অন্ধকারে আবৃত থাকে আফ্রিকার অধিকাংশ প্রান্তর।

3. বিদ্রূপ করেছিল ভীষণকে অথবা, বিরূপের ছদ্মবেশে কে কিভাবে ভীষণকে বিদ্রূপ করেছিল?

উত্তর: ভীষণকে ব্যঙ্গ আফ্রিকা নামাঙ্কিত কবিতায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর পৃথিবীর অন্য মহাদেশ থেকে বিছিন্ন আফ্রিকাকে ধীরে ধীরে সাবলম্বী হতে দেখেছিলেন। নিভৃত অবকাশে দুর্গমের রহস্য সংগ্রহ করেছিল বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ এ ভূখণ্ড। চিনেছিল জল, স্থল। আকাশের দুর্বোধ সংকেত। প্রকৃতি তাকে দিয়েছিল অপার রহস্যময়তা। অতীত জাদু মন্ত্র জাগাচ্ছিল আফ্রিকার চেতনাতীত মনে। আফ্রিকার ওপর সাম্রাজ্যবাদী শক্তির আস্ফালনকে আফ্রিকা নিজেই চিনে নিতে চাইছিল। সেই ভীষণ শক্তিশালী শক্তিকে ব্যঙ্গ করার স্পর্ধা অর্জন করেছিল।

4. অপরিচিত ছিল তোমার মানবরূপ-কার মানবরূপ কেন অপরিচিত ছিল?

উত্তর: অপরিচিত মানবরূপ: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত আফ্রিকা কবিতায়-পৃথিবীর মতো অন্য মহাদেশে থেকে বিচ্ছিন্ন আফ্রিকা যেন এক রহস্যময় ভূখণ্ড। সভ্য জগতের মানুষজন অন্ধ উল্লাসে ও বর্বর লোভ আফ্রিকাকে লুঠেরার মতো লুঠ করতে থাকে। কালো ঘোমটার নীচে অপরিচিত ছিল যে আফ্রিকার মানবরূপ তাকে সভ্যতার উল্লাসে মানুষজন উপেক্ষা করেছিল। ফলে স্বাধীন আফ্রিকা শৃঙ্খলিত হয়েছিল। তার হাতে পরানো হয়েছিল লোহার হাতকড়ি।

5. যখন গুপ্ত গহ্বর থেকে পশুরা বেরিয়ে এল-কখন পশুরা বের হয়ে এসেছিল? গুপ্ত গহ্বর থেকে কোন পশুরা কীভাবে বেরিয়ে এসেছিল?

উত্তর: নিলজ্জ শাসক আফ্রিকা মহাদেশকে শোষণের ক্ষেত্রভূমি করে সাম্রাজ্যবাদী শক্তি অমানবিকতার পরিচয় দিয়েছিল। সাম্রাজ্যবাদী শক্তির দল অর্থাৎ পশুশক্তি আফ্রিকা মহাদেশকে কলুষিত করতে তারা বের হয়ে এসেছিল।

শাসকদের চোখ রাঙানি গুপ্ত গহ্বর কথার আপাত অর্থ হল গোপন গুহাদার। কিন্তু কবি গোপন আস্তানা অর্থে গুপ্ত গহ্বরকে ব্যবহার করেছেন। সাম্রাজ্যবাদী বর্বর শক্তিকে কবি পশুরা শব্দে চিহ্নিত করেছেন। এরাই অশুভ ধ্বনিতে ঘোষণা করেছিল দিনের অন্তিমকাল। এই বর্বর রাজশক্তির হিংস্র নখ দন্ত প্রসারকে কবি রবীন্দ্রনাথ এই কবিতায় তুলে ধরেছেন।

6. এল ওরা লোহার হাতকড়ি নিয়ে, ওরা বলতে কাদের কথা বলা হয়েছে। লোহার হাতকড়ি নিয়ে আসার কারণ কী?

উত্তর: সাম্রাজ্যবাদী শক্তির মানুষ তথাকথিত সাম্রাজ্যবাদী শক্তির মানুষদের রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর আফ্রিকা কবিতায় ওরা বলে চিহ্নিত করেছেন।

লোহার হাতকড়ি: সাম্রাজ্যবাদী শক্তির মানুষরা বারবার আফ্রিকার ওপর অত্যাচার করে। কালো রঙের এই মানুষদের তারা উপেক্ষার দৃষ্টিতে দেখে। এই সহজ সরল জীবনযাপনে অভ্যস্ত মানুষদের নিজের ভূমি থেকে বিতাড়িত করা হয়। তাদের হাতে পরিয়ে দেওয়া হয় দাসত্বের শৃঙ্খল। বিপন্ন হয় আফ্রিকার স্বাধীনতা।

7. নখ যাদের তীক্ষ্ণ তোমার নেকড়ের চেয়ে-তোমার বলতে কাদের কথা বলা হয়েছে, কাদের নখ কেন নেকড়ের থেকে তীক্ষ্ণ?

উত্তর: আফ্রিকা মহাদেশ তোমার বলতে আফ্রিকা মহাদেশের কথা বলা হয়েছে।

সাম্রাজ্যবাদী শক্তির হিংস্রতা দুর্ভেদ্য জঙ্গলে পরিবৃত আফ্রিকার হিংস্র আরণ্যক প্রাণীদের অন্যতম হল নেকড়ে। নেকড়ের তীক্ষ্ণ নখের থেকেও সূচালো ও ধারালো হল সাম্রাজ্যবাদী শক্তির আগ্রাসন। পশ্চিমী দুনিয়া আফ্রিকার ওপর বর্বর উল্লাসে ঝাঁপিয়ে পড়ে। এদের আগ্রাসনের কথা বলতে গিয়ে কবি 'নখ যাদের তীক্ষ্ণ' এই বাক্য বন্ধটি প্রয়োগ করে দুনিয়ার লোলুপ হিংস্রতাকে সঠিকভাবে চিহ্নিত করেছেন। কবি এখানে সাম্রাজ্যবাদী শক্তির প্রতি ঘৃণা প্রকাশ করে আলোচ্য উক্তিটি প্রকাশ করেছেন।
আমাদের WhatsApp Group-এ যুক্ত হন👉   Join Now
আমাদের Telegram Group-এ যুক্ত হন👉   Join Now

Post a Comment