Posts

অস্ত্রীর বিরুদ্ধে গান কবিতা রচনাধর্মী প্রশ্ন

1. অস্ত্রের বিরুদ্ধে গান কবিতায় মূল বক্তব্য নিজের ভাষায় লেখ? অথবা, যুদ্ধবিরোধী কবিতা হিসাবে অস্ত্রের বিরুদ্ধে গান কবিতার বক্তব্য লেখো? উত্তর: মূল বক্তব্য: জয় গোস্বামী অস্ত্রের বিরুদ্ধে গান কবিতায় অশ্ব শক্তি এবং পেশি শক্তির বিরুদ্ধে মানুষের সুস্থ রুচি ও নান্দনিকতার প্রতিরোধ গড়ে তোলার কথা বলেছেন। গানকে অবলম্বন করে কবি যে অমিত শক্তির অধিকারী হয়েছে যা তাকে হাত বাড়িয়ে বুলেট প্রতিহত করার প্রভাস দিয়েছেন। গান তাকে এক আশ্চর্য ঐক্যবোধে বেঁধেছে। তাই তার হাতে হাত মিলিয়েছে। হাজার হাজার মানুষ পায়ে পা মিলিয়েছে সহস্র পা। দীপ্ত ভঙ্গিতে কবি বলতে পেরেছেন-“অস্ত্র ফ্যালো অস্ত্র রাখো পায়ে।" পৃথিবীর ইতিহাসের অস্ত্র কখন শেষ কথা বলেনি। জয়ী হয়েছে মানুষের শুভ বুদ্ধি, একতা এসবের প্রতীক। গান কবিকে মানুষের সঙ্গে মিলিয়েছেন। রক্ত মুছিয়ে সুন্দরের মুখোমুখি দাঁড় করিয়েছে। চারপাশে হিংসা এবং রাজ্যের মধ্যে গান সুন্দরের আরাধনা করে। গানের নানা রূপ বিষয়ে তার সুরের নানা বৈচিত্র্য কখনও সে হয়ে ওঠে ঋষিবালকের মতো নিষ্পাপ, কখনো তার স্পর্শ লেগে থাকে কোকিলের মোহময় সুরেলা সৃষ্টি। যুদ্ধরাজ মানুষ অস্ত্র হাতে মনুষ্যত্বের বিপক্ষে গিয়ে যখন দাঁড়ায়, তখন কিন্তু শেষ পর্যন্ত এই গানই মানুষের হাত ধরে থাকে। তাকিয়ে থাকে অস্ত্রের বিরুদ্ধে লড়াই করার প্রেরণা, শক্তি এবং সাহস। সেই গানের বর্ম পরে কবি অস্ত্র প্রতিহত করেন অবহেলায়, আর অন্যদেরকেও নিয়ে যেতে চান সেই গানের কাছাকাছি- "তোমায় নিয়ে বেড়াব গান নদীতে, দেশ গাঁয়ে।" 2. "আমি এখন হাজার হাতে পায়ে/এগিয়ে আসে, উঠে দাঁড়ায়"-হাজার হাতে পায়ে এগিয়ে আসার তাৎপর্য কী? কবির কোন মনোভাব এখানে ধরা পড়েছে? উত্তর: তাৎপর্য: 'অস্ত্রের বিরুদ্ধে গান' কবিতায় কবি জয় গোস্বামী অস্ত্রের বিরুদ্ধে লড়াই-এর জন্য সংগীতের ক্ষমতার কথা বলেছেন। রাষ্ট্র কিংবা কোনো সন্ত্রাস সৃষ্টিকারী শক্তি মানুষের বিক্ষোভে, প্রতিবাদে গান হয়ে উঠেছে গুরুত্বপূর্ণ অবলম্বন। কবির কথায় গান শুধু আনন্দের উৎস নয়, লড়াই-এ সংগ্রামেও কবি দেখেছেন, তিনি একা নন সহস্র মানুষ তার সহযাত্রী হয়েছে। ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে কিংবা পৃথিবীর বিভিন্ন গণমুক্তি সংগ্রামের ইতিহাসে প্রমাণ করে যে, যুগে যুগে মানুষের প্রতিবাদের অস্ত্র হয়েছে গান। মিলিত কণ্ঠে গান হয়ে উঠেছে মানুষের বাঁচার সুর। কবির মনোভাব: কবি জয় গোস্বামী গানকে আগলে ধরে সমস্ত প্রতিবন্ধকতাকে দূরে রাখতে চান। জীবন সংগ্রামে স্বাধীনতার লড়াই-এ অস্ত্র নয় গানকে অবলম্বন করে সবকিছু প্রতিহত করতে চান। কবি মনে করেন সাম্রাজ্যবাদী শক্তির লেলিহান শিখা পৃথিবীর বুকে ভয়ালরূপে সৃষ্টি করলেও গান পারে মানুষকে বাঁচার ভরসা দিতে। চিল শকুন যেমন ধ্বংসের বার্তা বয়ে আনে। তেমনই বসন্তের কোকিল শান্তির মধুর গান শুনিয়ে পৃথিবীকে নতুন করে বাঁচিয়ে তোলে। ঋষিবালকের শান্তি সৌম্য নির্মূলরূপ মানুষকে মুগ্ধ করে। তাই ঋষিবালককে সঙ্গে নিয়ে পল্লীবাংলা থেকে অন্য দেশের পথে গান নিয়ে বেড়াতে চান।

Post a Comment